সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে আপনি হয়তো অনেক আগে থেকেই কিছু হলেও একটু জানেন। আজ এবিষয়ে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো।
সাধারনত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা টুইটার, ফেসবুক এবং ইউটিউবে কাজ করে টাকা ইনকাম করা বুঝি। এর পাশাপাশি লিংকডইন, পিন্টারেস্ট এবং গুগল প্লাসেও মার্কেটিং করা যায়। তবে বর্তমান সময়ে এটি ইউটিউব এবং ফেসবুকেই বিরাট ভুমিকা রাখছে। সারা পৃথিবীতে অনেকগুলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আছে। তার মধ্যে কিছু কিছু দেশে নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া খুব কার্যকারি। যেমনঃ ইন্ডিয়াতে ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটস আপ এবং ভাইবার খুবই জনপ্রিয়, আমেরিকাতে পিন্টারেস্ট ও রেদ্দিট, রাশিয়াতে ভিকে, স্তাম্বুলে আপন ও টুইটার অনেক বেশি জনপ্রিয়। বাংলাদেশে ফেসবুক এবং ইউটিউব খুবই জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সবসময় কার্যকর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মানুষের কার্যকালাপের উপর। আমরা ফেসবুক- এর মাধ্যমে যে মার্কেটিং করি তাকে ফেসবুক মার্কেটিং বলে। তেমনি ইউটিউব এ ভিডিও পোস্ট করে যে মার্কেটিং করি তা ইউটিউব মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তাঃ
সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং বর্তমান সময়ের জন্য সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একটা সময় মানুষ টেলিভিশন দেখে বিনোদন উপভোগ করতো, সংবাদ দেখতো, খেলা দেখতো। এ সবকিছুর জন্য টেলিভিশন ই ছিলো তাদের একমাত্র ভরসা। এর জন্য তাদেরকে সবসময় টেলিভিশনের সামনে বসে থাকতে হতো। মাঝে মাঝে দেখা যেতো টেলিভিশন এর নির্দিষ্ট সময়ে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু এখন সময় পাল্টে গেছে। আপনি চাইলেই যেকোনো সংবাদ, খেলা, বিনোদন দেখতে ও পরতে পারবেন খুব সহজে এবং যখন তখন। তাহলে বুঝতেই পারছেন সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি চাইলেই এই গুরুত্বটা কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং করতে পরবেন। আপনি আপনার ওয়বসাইটের প্রডাক্টগুলো বিভিন্ন সাইটে শেয়ার করুন। দেখবেন এর ফলাফল খুব ভালো হবে। প্রায় সমগ্রো পৃথিবী এখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর উপর নির্ভরশীল। আপনি নিজেই ভেবে দেখুন, আপনি লাস্ট কখন ইউটিউব বা ফেসবুক চালাননি। তাহলে সহজেই আপনি বুঝতে পারলেন এর গুরুত্বপূর্ণতা কেমন।
আপনি তাহলে জানতে এবং বুঝতে পারলেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এবং কেন করাটা জরুরি।
আপনি চাইলে বিভিন্ন ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন। আপনি ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমেও শুরু করতে পারেন। কেননা বর্তমান সময়ে ফেসবুক আর ইউটিউব মার্কেটিং অনেক বেশি জনপ্রিয় এবং এ দুটি সোশ্যাল মিডিয়াতে মানুষ অনেক বেশি সময় পার করে থাকে। যেটা আপনি কাজে লাগাতে পারেন। তাই আপনি শুরুতে এই দুটি মার্কেটিং করতে পারেন আপনার ওয়েবসাইট বা আপনার প্রডাক্ট এর জন্য। আসুন এবার কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবেন তার একটা সংক্ষিপ্ত বিবরন প্রদাব করা হলোঃ
ফেসবুক মার্কেটিংঃ
বাংলাদেশের কমবেশি সবাই আমরা ফেসবুক ব্যাবহার করে থাকি। সাধারনত যাদের বয়স ১৫-৫০ এর মাঝে তারা খুব বেশি একটিভ থাকে। তাই আপনি চাইলেই এখানে মার্কেটিং করতে পারবেন। কেননা ফেসবুক এর মাধ্যমে সবথেকে বেশি ট্রাফিক ওয়েবসাইটে আনা সম্ভব। আপনি যেকোনো একটা নিশ নিয়ে কাজ করে আপনি ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক বেশি ট্রাফিক আনতে পারবেন। আপনি নিউজ, খেলাধুলা, শিক্ষা সংক্রান্ত বা মজার ভিডিও- এসব সাইট নিয়ে কাজ করতে পারেন। আর ফেসবুকে ভালো কিছু গ্রুপ এবং পেজ তৈরি করে আপনি অনেক অনেক ট্রাফিক আনতে পারবেন আপনার ওয়েবসাইটে। এতে করে আপনার জন্য একটা সুবিধা হবে। আপনার ওয়েবসাইট যদি ফেসবুকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তাহলে খুব দ্রুতো আপনার ওয়েবসাইট রেংক করবে। তাই বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মার্কেটিং করতে চাইলে ফেসবুক অনেক বেশি কার্যকর।
ইউটিউব মার্কেটিংঃ
বর্তমানে ইউটিউবের অবস্থান দুই নাম্বারে। গুগল এরপরেই ইউটিউবের অবস্থান। কিন্তু মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেইসবুকের পরেই ইউটিউবের অবস্থান। আর যদি প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করেন তাহলে ফোসবুক আপনার জন্য সবথেকে আদর্শ। আর দি নিউজ নিয়ে কাজ করেন তাহলে ইউটিউব আপনার প্রথম পছন্দ থাকা উচিৎ। কেননা মানুষ এখন টেলিভিশনের সামনে বসে যতটা সময় দেয় তার চেয়ে বেশি সময় দেয় ইউটিউবে সংবাদ দেখে। আপনার ওয়েব সাইট দি হয় শিক্ষা সংক্রান্ত তাহলে আপনি অবশ্যই ইউটিউব নিয়ে মার্কেটিং করতে পারেন। কেননা শিক্ষার জন্য ইউটিউব এখন সবথেকে বড় প্লাটফর্ম।
গুগল প্লাস মার্কেটিংঃ
আপনার যদি ওয়েবসাইট থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কিছু গুগল প্লাস একাউন্ট থাকা দরকার। কেননা আপনি যদি ওয়েবসাইটের সব পোস্টগুলো গুগল এ ইনডেক্স না করেন তাহলে কখনোই আপনার পোস্টগুলো গুগলের প্রথম পাতায় show করবে না। তাই গুগল প্লাস মার্কটিং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আপনার জন্য। আপনি যদি প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করতে চান তাহলে গুগল প্লাস অনেক বেশি দরকারি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য। কেননা গুগল প্লাস গুগলের একটা প্রডাক্ট। আপনি যখন গুগল প্লাস-এ কিছু শেয়ার করছেন তখন বুঝতে হবে গুগল প্রডাক্ট তা ইনডেক্স করে নিচ্ছে। এটা আপনার ওয়েবসাইট- এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই যখন আপনার ক্রেতা এই প্রোডাক্ট এর নাম লিখে সার্চ করবে গুগল তখন আপনার প্রোডাক্টকে প্রথমে বা প্রথম পাতায় show করবে।
টুইটার মার্কেটিংঃ
টুইটার মার্কেটিং বর্তমান সময়ে সবথেকে স্মার্ট মার্কেটিং। কেননা সারা পৃথিবীতে খুব বেশি ব্যবহারকরা হলেও বাংলাদেশে এর ব্যবহার খুবই কম। তারপরও আপনি টুইটার মার্কেটিং এর ভালো একটা ইমেজ তৈরি করতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য টুইটার একাউন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা টুইটার একাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি বাইরের এবং দেশের অনেক ট্রাফিক পাবেন। আপনার যদি প্রোডাক্ট রিলেটেড ওয়েবসাইট না হয়ে থাকে তাহলে টুইটার আপনার জন্য একটা আদর্শ মার্কেটিং হবে।
লিংকডইন মার্কেটিংঃ
বর্তমান সময়ে লিংক্ডইন মার্কেটিং বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লিংক্ডইন মার্কেটিং এখন অনেক কার্যকরি এবং ফলপ্রসূ। লিংক্ডইন এর মাধ্যমে আপনি চাইলে অনেক ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইটে আনতে পারবেন। এবং খুব ভালো একটা ইমেজ তৈরি করে ফেলতে পারেন। আপনার ওয়েবসাইটে সবগুলো প্রডাক্ট আপনি লিংক্ডইন এ নিয়মিত শেয়ার করতে পারবেন এবং এতে খিব ভালো feedback পাবেন।
আজ তাহলে জানতে পারলেন কিভাবে এবং কোথায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবেন। আর এ বিষয়টি এখন আপনার সামনে হয়তো একদম পরিষ্কার। তাই আর দেরি না করে,
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটং শুরু করুন, নিজের ক্যারিয়ার কে পরিষ্কার করুন।
Thanks For Reading.....
0 Comments